Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

মহাস্থানগড়

মহাস্থানগড়ের বিস্তীর্ণ ধ্বংসাবশেষ প্রাচীন পুন্ড্রবর্ধণভূক্তির রাজধানী পুন্ড্রনগরের সুদীর্ঘ প্রায় আড়াই হাজার বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের এক নীরবস্বাক্ষী। এ ধ্বংসাবশেষ বগুড়া জেলা শহরের ১৩ কিঃমিঃ উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত। সমগ্র বাংলার সর্বপ্রধান ও সর্বপ্রাচীন এ দূর্গনগরী পর্যায়ক্রমে মাটি ও ইটের বেষ্টনী প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত যা উত্তর-দক্ষিণে ১৫২৫ মিটার দীর্ঘ এবং পূর্ব-পশ্চিমে ১৩৭০ মিটার প্রশস্ত ও চারপাশে সমতল ভূমি হতে প্রায় ৫ মিটার উঁচু। বেষ্টনী প্রাচীর ছাড়াও পূর্ব দিকে নদী ও অপর তিনদিকে গভীর পরিখা নগরীর অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হতে জানা যায় যে, কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত এ স্থান পরাক্রমশালী মৌর্য, গুপ্ত এবং পাল শাসক বর্গের প্রাদেশিক রাজধানী ও পরবর্তীকালে হিন্দু সামন্ত রাজাগণের রাজধানী ছিল। দুর্গের বাহিরে উত্তর, পশ্চিম, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ৭/৮ কিলোমিটারের মধ্যে এখনও বিভিন্ন ধরণের বহু প্রাচীন নিদর্শন রয়েছে। যা উপ-শহরের স্বাক্ষ্য বহন করে। উল্লেখ্য বিখ্যাত চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং ভারতবর্ষ ভ্রমণকালে (৬৩৯-৬৪৫ খ্রিঃ) পুন্ড্রনগর পরিদর্শন করেন। প্রখ্যাত বৃটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে মহাস্থানগড়ের ধ্বংসাবশেষকে হুয়েন সাঙ বর্ণিত পুন্ড্রনগর হিসাবে সঠিকভাবে সনাক্ত করেন। 

১৯২৮-২৯ সালে মহাস্থানগড়ে সর্বপ্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখনন কার্য শুরু হয়। এ সময় নগরীর মধ্যে বৈরাগীর ভিটা, মুনীর ঘোন ও বাইরে গোবিন্দ ভিটা নামক তিনটি স্থানে উৎখনন করা হয়। এর দীর্ঘ দিন পর ১৯৬০ ও ৬১ সালে এবং পরবর্তীতে ১৯৮৮ সাল হতে নিয়মিতভাবে দুর্গের বিভিন্ন অংশ উৎখনন করা হয়। তবে ১৯৯৯ পর্যন্ত পূর্ব দুর্গ প্রাচীরের মধ্যবর্তী এলাকায় খনন করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০০০ সাল থেকে মাজারের পশ্চিম পাশে উৎখনন কাজ করা হচ্ছে।

দীর্ঘ সময় ব্যাপী ব্যাপক অনুসন্ধান ও খননের ফলে দুর্গনগরীর অভ্যন্তরে খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে শুরু করে মুসলিম যুগ পর্যন্ত প্রায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে বসতি নিদর্শন উন্মোচিত হয়েছে। ১৮ টি স্তরে প্রাক-মৌর্য, মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও মুসলিম যুগের কাঁচা-পাকা ঘর-বাড়ী, রাস্তা, নর্দমা-নালা, কুপ, মন্দির, মসজিদ, তোরণ, বুরুজ ইত্যাদি উন্মোচিত হয়েছে। এসব স্থাবর স্থাপত্যিক কাঠামো ছাড়াও আবিষ্কৃত হয়েছে তদানীন্তন নগর জীবনের বিভিন্ন অস্থাবর সাংস্কৃতিক দ্রব্যাদি যেমন মৌর্য যুগের লিপিযুক্ত শিলা খন্ড, ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা ও ছাঁচে ঢালা তাম্র মুদ্রা, ব্ল্যাক এন্ড রেড ওয়ার, রুলেটেড ওয়ার, উত্তরাঞ্চলীয় কালো মসৃণ মৃৎপাত্র, শুংগ বৈশিষ্ট্য মন্ডিত পোড়ামাটির ফলক, প্রস্তর ও পোড়ামাটির মূর্তি, স্বল্প মূল্যবান প্রস্তর গুটিকা, পোড়ামাটির গুটিকা, গোলক, জালের কাঠি এবং মাটির ও ধাতব দ্রব্যাদি, প্রচুর পরিমাণ সাধারণ মৃৎপাত্র এবং আরও উৎকীর্ণ লিপিযুক্ত একটি প্রস্তর ফলক বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, প্রধান কার্যালয়,ওয়েবসাইট লিংক

http://www.archaeology.gov.bd

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, প্রধান কার্যালয়,অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ লিংক 

https://www.facebook.com/archaeology.gob

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চল, বগুড়া, ফেসবুক পেইজ

https://www.facebook.com/archaeologyrajshahi